জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইদিনের আমরণ গণ-অনশন এবং গতকাল (৪ ফেব্রুয়ারী) মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরুপে বাতিল ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২ টায় প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান এ ঘোষণা দেন।
কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিং শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মোহাম্মদ কামরুল আহসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন এবং সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
পোষ্য কোটা ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। পূর্বের মতো কোটা বহালের দাবিতে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বটতলা থেকে মিছিল বের করে বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করেন এবং পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।
অন্যদিকে, পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে রাত সোয়া ১২টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অংশীজনের সঙ্গে আমরা জরুরি আলোচনায় বসি। সব অংশীজন পোষ্য কোটার বিষয়টি বিবেচনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির ওপর দেয়। কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জরুরি সভায় পোষ্য কোটা বাতিল করা হয়েছে।
এসময় উল্লাস প্রকাশ করে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, পোষ্য কোটা বাতিলের মাধ্যমে জাবি প্রশাসন একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আশা করি এখন থেকে মেধাবীরা সঠিকভাবে মূল্যায়িত হবেন।
Post a Comment