গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থানা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার পরে নিরাপত্তার জন্য রাতভর ওই থানা ঘিরে রেখেছিল সেনাবাহিনী। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সন্দেহে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে সাঁজোয়া যান নিয়ে সারারাত টুঙ্গিপাড়া থানা ঘিরে রাখে সেনাবাহিনী। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে এবং আশেপাশের সেনাবাহিনীর টহল দেখা গেছে।
এর আগে, রবিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে অবস্থান করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণের সময় এক ব্যক্তিতে আটকের জের ধরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, হামলাকারী সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণ করছেন, এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এ সময় লিফলেট বিতরণ বন্ধ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় সাফায়েত গাজীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। সে সময় পুলিশের গাড়ি আটকে ভাঙচুর এবং একজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে তাদের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা।
পরে থানার অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারাও তোপের মুখে পড়েন। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে নেন।
বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা দিতে বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে সারারাত অবস্থান করে সেনাবাহিনী। এ ছাড়াও টুঙ্গিপাড়া থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমাদের থানাসহ সব পুলিশ সদস্যের নিরাপত্তাজনিত কারণে সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানার চারপাশে অবস্থান করেছেন। হামলায় পাঁচ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
টুঙ্গিপাড়া ইউএনও মঈনুল হক বলেন, ‘পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও একজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে শান্ত করে সেই পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে ওসির কাছে পৌঁছে দিই। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
Post a Comment